রাওলাট আইনের উদ্দেশ্য কী ছিল ও গান্ধিজি কেন এর বিরোধিতা করে ছিল ?

রাওলাট আইন : ব্রিটিশ সরকার একদিকে মন্টেগু -চেমস্ফোর্ড সংস্কারের মাধ্যমে ভারতীয় জনগনকে সন্তুষ্ট করার চেষ্টা করে। অন্যদিকে ব্রিটিশ বিরোধী গন-আন্দোলন বন্ধ করে দেওয়ার উদ্দেশ্যে রাওলাট কমিশন গঠন করে এবং ১৯১৯ খ্রিষ্টাব্দের ১৮মার্চ আইন সভাই বিলটি পাশ হলে তা রাওলাট আইন নামে পরিচিত হয়

  • ১। প্রতিরক্ষা আইন : প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় ভারতে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন দমন করার জন্য সরকার ভারতপ্রতিরক্ষা আইন প্রবর্তন করেছিলেন। এই আইনটির মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে নতুন একটি আইন প্রবর্তনের প্রয়োজন হয়।
  • ২। শ্বেতাঙ্গদের খুশি করার চেষ্টা : মন্টেগু -চেমর্স্ফোড শাসন সংস্কারের মাধ্যেমে সরকার ভারতীয়দের তোষন করার চেষ্টা করলে কিছু কিছু ইংরেজ অসন্তুষ্ট হয়। এই শ্রেণিকে খুশি করার উদ্দেশ্যে রাওলাট আইন প্রবর্তনের পরিকল্পনা করে।
  • ৩। বিপ্লববাদের প্রসার : এই সময় ভারত সরকারের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ বৃদ্ধি পায়। এই কার্যকলাপ দমন করার উদ্দেশ্যে সরকার রাওলাট আইন প্রর্বতন করে।
  • ৪। গন আন্দোলন : প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর দ্রব্য মূল্য বৃদ্ধি, খরা,মহামারি,বেকারত্ব প্রভৃতি নানা কারনে ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে সর্বত্র গন আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে তাই আন্দোলন দমন করার উদ্দেশ্যে রাওলাট আইনের প্রয়োজন হয়ে পড়ে।

গান্দিজির বিরোধিতা :

  • ১। আইনের আপত্তিকর দিক : রাওলাট আইনের মূল উদ্দেশ্যে হিসাবে বিল্পবী ও সন্ত্রাসবাদের দমনকে উলে­খ করা হয়। কিন্তু বিনা বিচারে যে কোনো ব্যাক্তিকে আটক করা বাসস্থানের উপর নজর রাখা ও ঘর তল­াসি করা মোট টাকার জামানত আদায় করা প্রভৃতি দমন মূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। তাই ভারতীয়দের স্বার্থে গান্ধিজি এই আইনের বিরোধিতা করে।
  • ২। জাতীয় আন্দোলনের রূপ বদল : জাতীয়কংগ্রেস প্রথম দিকে আবেদন নিবেদনের রাজনীতি করে ভারতবাসির স্বার্থরক্ষা করতে পারেনি। তাই সরাসরি ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের পরিস্থিতি তৈরি হয়। এই পরিস্থিতির সঙ্গে সংগতি রেখে গান্ধিজি ব্রিটিশ বিরোধি আন্দোলন গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেন।
  • ৩। সত্যাগ্রহ আদর্শের প্রয়োগ : গান্ধিজির রাজনৈতিক আদশর্ ছিল সত্যাগ্রহ। সত্যাগ্রহের মূল কথাই হল অন্যায়ের সাথে অসহযোগীতা করা। গান্ধিজি মনে করেন রাওলাট আাইন জারি করে ব্রিটিশরা অন্যায় করেছে। তাই এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে দেশ জুড়ে সত্যাগ্রহ আন্দোলন গড়ে তোলা প্রয়োজন।

===>>> হবসন ও লেনিনের ব্যাখ্যা